ওসির মেয়ে যখন বউ , পর্বঃ ০১





গল্পঃ ওসির মেয়ে যখন বউ

লেখকঃ  Mahbub Rohman Shuvo

পর্বঃ ০১ 


ঢিলেঢালা পোশাক পরা কাঁদে ঝুলন্ত এক ব্যাগ। চোখে বড় চশমা। মাথায় চুপ চুপ করে তেল দেওয়া। মনে হচ্ছে যেন তালের ড্রাম থেকে উঠে এসেছি আমি । হ্যাঁ আপনি ঠিকই ধরেছেন এতক্ষণ আমার কথা বলছিলাম আমি ঢিলেঢালা পোশাক এবং কাঁদে একটা দুরন্ত ব্যাগ নিয়ে ভার্সিটির ভিতরে ঢুকছি। আমার নাম রায়হানুল ইসলাম বাবা-মার একমাত্র সন্তান। বাড়ি রাজশাহী।। আপাতত পরিচয়টা একটু গিয়ে থাক বাকিটা না হয় পরবর্তীতে জানিয়ে দিব। 


আমি নিচের দিকে তাকিয়ে হাটতেছি হঠাৎ করে মনে হল কেউ একজন আমাকে ল্যাং মেরেছে । লেং খেয়ে আমি মাটিতে পড়ে গেলাম । আমি ওপরের দিকে তাকিয়ে দেখি কয়েকটা মেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। আমি বুঝতে পারলাম মেয়েগুলি আমাকে ল্যং মেরেছে। আমি উঠে তাদের সামনে গিয়ে বললাম। ,,,


আমিঃ আপু সরি আসলে দেখতে পাইনি।


তখন মেয়েগুলোর থেকে একজন আমাকে ঠাস ঠাস ঠাস ঠাস করে থাপ্পর মারল,,,


আমার মাথায় তখন প্রচন্ড রাগ হয়ে গেলো আমি মেয়েটিকে মারার জন্য যেই হাত বারালাম তখনি একটাকথা মনে পরলো তাই তাকে কিছু করলাম না৷ তখন মেয়েটা আমাকে বললো,,


🔰মেয়েটিঃ কোত্থেকে যে আসে এসব ফালতু পোলাপান ,মুডটাই নষ্ট করে দিল। 


তখন পাশে থাকা আরেকটা মেয়ে বলল,,,


💔2য় মেয়েঃ সোনালিকা তুই একদম ঠিকই বলেছিস। আর তোর কাকা ও কেমন থার্ড ক্লাস দের এডমিশন দেয় এই ভার্সিটিতে। 


 🔰সোনালিকাঃ ঠিকই বলেছিস রে কেয়া চাচ্চুর মনে হয় মাথাটা গেছে এসব ফালতু ছেলেদের কলেজে এডমিশন দেয় আজে বাজে ছেলে।


 💔কেয়াঃ এই ছেলে তুই এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন যা এখান থেকে তোর কাছ থেকে বিশ্রী গন্ধ বের হচ্ছে। 


🔰 সোনালিকাঃ ঠিকই বলেছিস। 


  আমি আর সেখানে এক মুহূর্তে দাঁড়িয়ে না থেকে সোজা চলে গেলাম ক্লাসে। সেখানে গিয়ে একদম পেছনের দিকটাই গিয়ে বসলাম। এবং একটা বই বের করে পড়তে লাগলাম। 


 ওকে করে ক্লাসে ছেলে মেয়ে আসছে। আমি এখানকার কাউকেই চিনিনা আর কেউ আমাকে চেনে না। এমন কি কেউ আমার সাথে এসে কথা বলছে না। আমি ছেলে মেয়েদের এমন কাহিনী দেখে একটু হাসলাম। 


 আমি বই পড়ে যাচ্ছি হঠাৎ করে বেল বাজিয়ে দিলো এবং ক্লাসে স্যার আসার সময় হল। তখন দেখলাম সোনালিকা ও কেয়া আসছে । সাথে তাদের বান্ধবীরাও আসছে । ভিতরে ঢুকে আমাকে দেখে হয়তো তারা খুব অবাক হলো । অবাক হলে হোক না হলে না হোক তাতে আমার কি আমার পড়া আমি পড়ি ওরদের দিকে তাকিয়ে আমার কোনো লাভ নেই। 

 

কিছুক্ষণ পর ক্লাসে স্যার প্রবেশ করল এবং বলতে লাগলো,,,,  


🌲স্যারঃ গুড মর্নিং স্টুডেন্ট। তোমরা কেমন আছো আশা করি ভালো আছো। আমার আমি আজ থেকে তোমাদের নতুন ক্লাস টিচার। যদি তোমরা অনার্স সেকেন্ড ইয়ার থেকে থার্ড ইয়ারে এসে তাই। 


 ☣️ছাত্র-ছাত্রীরাঃ গুড মর্নিং স্যার। আমরা ভালো আছি আপনি কেমন আছেন। 


🌲স্যারঃ আমিও ভালো আছি । আর হা তোমরা হয়তো রায়হানকে চেনে থাকবে। ( আমাকে দেখিয়ে দিয়ে)


 ☣️ ছাত্র-ছাত্রীরাঃ না স্যার ওর সাথে এখন আমরা কেউ পরিচিত হই নাই।


🌲স্যারঃ এটা কি কোন কথা । তোমাদের মাঝে একজন নতুন স্টুডেন্ট আসলো ,,, আর তোমরা তার খোঁজ খবর নিলে না ।। আচ্ছা সমস্যা নেই আমি পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি তোমাদের সাথে।


 এরপর স্যার আমাকে সামনে ডাকলেন। আমি সামনে যাওয়ার পরে স্যার আমাকে আমার পরিচয় দিতে বললেন আমি সবাইকে আমার পরিচয় দিতে লাগলাম,,


 আমিঃ আমি রায়হানুল ইসলাম, আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় বর্ষের পড়তাম। ওখানে থেকে ট্রানস্ফার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়েছি। আশা করি এর থেকে বেশি কিছু বলা লাগবে না।


🌲 স্যারঃ সবাই পরিচিত হয়েছে তো। আসবো ক্লাসের সবার সাথে কথা বলবে পরিচিত হবে ওকে। 


আমিঃ আচ্ছা স্যার। 


🌲 স্যারঃ তো এখন গিয়ে তুমি তোমার সিটি বস।


 এরপর আমি এসে আমার সিটে বসলাম। স্যার ক্লাস করাচ্ছে আমি মনোযোগ দিয়ে ক্লাস করছি। ক্লাস শেষ হওয়ার পর একটা ছেলে এসে আমাকে বলতে লাগলো,, 


🌷 ছেলেটিঃ হাই আমি জামিনুর । তোমার বন্ধু হতে চাই।


 জামিনুর কথা শুনে আমি বেশ অবাক হলাম কারণ বাড়িতে আসার পর এখনো কেউ আমার সাথে ভালো করে কথাও বলেনি আর এখানে সরাসরি আমাকে বন্ধু হওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছে ।


 জামিনুরঃ কি হলো আমাকে কি বন্ধু বানানো যায় না??


 আমিঃ আমি তা বলিনি । আসলে আমার মতো একটা খ্যাত টাইপের ছেলের সাথে আপনি বন্ধুত্ব করতে চাচ্ছেন???


🌷 জামিনুরঃ বন্ধুত্বের মাঝে কোন ধনী গরিব স্মার্ট আনস্মার্ট । দেখে বিবেচনা করা যায় না। তুমি আমার বন্ধু হবে। হবে কিনা এটা বল??


আমিঃ আচ্ছা যাও বন্ধু হলাম আমরা আজ থেকে বন্ধু। 


🌷 জামিনুরঃ আচ্ছা বন্ধু তাহলে।  

তোর বাবা মা কি করে রে। 


আমিঃ বাবা-মা রাজশাহীতে থাকে। 


🌷জামিনুরঃ তোর বাবা কি করে??


আমিঃ সেটাও অন্য সময় জানতে পারবি। 


🌷জামিনুরঃ এখন বললে কি হবে???


 আমিঃ আমার বিষয় বাদ দে এখন তোর বিষয়ে বল তোর বাবা মা কি করে??


🌷 জামিনুরঃ বাবা হলে এখানকার একজন বিজনেসম্যান আর মা গৃহিণী। আমাদের বাংলাদেশ এবং বাইরে ও একটা ফ্যাক্টরি আছে। 


আমিঃ তাহলে তো তোরা খুব বড়লোক??


🌷 জামিনুরঃ হুম মোটামুটি। তো চলো বাসার দিকে যাই। 


আমিঃ তুই যে আমার কিছু কাজ আছে। 


🌷 জামিনুরঃ আচ্ছা তাহলে কালকে দেখা হবে। 


আমিঃ ওকে বাই বাই ।


 এই বলে আমি ভার্সিটি থেকে বের হয়ে চলে গেলাম বাসার দিকে। আমি আবার নিচে দিয়ে তাকিয়ে গেট দিয়ে বাইরের হতে যাবো। ঠিক তখন দেখি সোনালিকা আমাকে ইচ্ছে করে ধাক্কা দিতে যাচ্ছিল আমি সরে গিয়েছি ।আর সোনালিকা সোজা গিয়ে মাটির ওপরে পরলো। 


  এটা দেখে সোনালিকা বান্ধবীরা হাসতে ছিল সে আমাকে আবারো ঠাস ঠাস ঠাস করে তিনটা থাপ্পর মারলো আর বলতে লাগলো,,,


 সোনালিকাঃ এই ফাজিল পোলা । তোর সাহস কি করে হয় আমাকে ফেলে দেওয়ার??


 আমিঃ আপু আমি কই আপনাকে ফেলে দিলাম?? আপনি তো উল্টো আমাকে ধাক্কা মারতে গিয়েছিলেন। তখন আমি সরে গিয়েছি যার কারণে আপনি পড়ে গেছেন ।এখানে তো আমার কোন দোষ দেখছি না??


💔 কেয়াঃ দেখেছিস সোনালিকা তোর মুখের উপর কথা বলে ।আবার তোর নামে অভিযোগ দিতাছে। কত্ত বড় খারাপ একটা ছেলে।


🔰 সোনালিকাঃ ওই তুই আমাকে মিথ্য অভিযোগ দিচ্ছিস কেন ??আমি কখন থেকে ধাক্কা দিতে গেলাম ??তুই তো আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিলি। 


  এই মাইয়া কয় কি এখন উল্টো আমার ওপরে অভিযোগ দিচ্ছে হায় হায় এ কেমন মাইয়ার পাল্লায় পরলাম। 


 তখন পাশ দিয়ে একটা ছেলে যাচ্ছিল একটু বকাটে টাইপের। ছেলেটা এসে সোনালিকা কে বলল,,,


✅ছেলেটিঃ সোনালিকা কি হয়েছে??


🔰 সোনালিকাঃ দেখ না এই ছেলেটা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে??


✅ ছেলেটিঃ এই মেয়ে আপনার সমস্যাটা কি ?? আপনি ওকে ধাক্কা দিয়েছেন কেন?? মেয়েদের সাথে ডলাডলি করতে খুব ভাল লাগে আপনার তাইনা। 


চলবে......


إرسال تعليق

Post a Comment (0)

أحدث أقدم